Friday, March 6, 2020

সেলাই মেশিন পেলেন প্রতিবন্ধী চৈতালি চাকমা।

নূতন ধন চাকমা, পানছড়ি(খাগড়াছড়ি)
 
সেলাই মেশিন পেলেন প্রতিবন্ধী চৈতালি চাকমা।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ-এর সম্মানিত সদস্য শতরূপা চাকমা এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক প্রতিভা ত্রিপুরা আজ(০৬.০৩.২০২০ইং)দুপুর ১২টায় প্রতিভা ত্রিপুরা বাসভবনের সামনে এ সেলাই মেশিনটি প্রতিবন্ধী চৈতালি চাকমা হাতে তুলে দেন। সেলাই মেশিন রক্ষণাবেক্ষনের জন্য নগদ পাঁচ হাজার টাকাও তুলে দেন শতরূপা চাকমা।


এসময় উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সমকাল এর খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি প্রদীপ চৌধুরী, দীঘিনালা উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা অর্পনা চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের নেত্রী সুনীল দেবী চাকমা, পানছড়ি প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি নূতন ধন চাকমা ও পানছড়ি প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান অলি।

পানছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের মির্জিটিলা মধুমঙ্গল পাড়ার মৃত-সুখ রঞ্জন চাকমা ও মৃত-ইন্দ্রমুখী চাকমা মেয়ে চৈতালী চাকমা। জন্ম থেকেই তিনি প্রতিবন্ধী। তাঁর বাম পায়ের হাটু থেকে নিচের অংশ একেবারে চিকন আর বাঁকানো। তাই সে ছোটকাল থেকে লাঠি ভর দিয়ে চলাচল করে। লাঠির ওপর ভর করেই প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ধী পেরিয়ে এখন ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত।
সে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে পানছড়ি মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০১৪-১৫ সালে ঢাকা কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পাশ করেন। বর্তমানে পানছড়ি সরকারী ডিগ্রী কলেজের ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।
পড়ালেখার পাশাপাশি উপজেলা মহিলা অধিদপ্তরের আওতাধীন সেলাই প্রশিক্ষন কোর্স প্রশিক্ষন করতেছেন।

চৈতালী চাকমা বলেন- ২০১৪ইং সালে মা ও ২০১৬ইং সালে বাবা স্বর্গীয় হওয়ার পর থেকে বাবার রেখে যাওয়া ঘরে একমাত্র বড় ভাই অমর কান্তি চাকমার সাথেই আমার বসবাস। ঘর ভিটা ছাড়া বাবার আর কোনো জায়গা-জমি না থাকায় পরের জমি বর্গা চাষ আর দিন মজুরী করেই চলছে ভাইয়ের সংসার।
তাই বড় ভাইয়ের একান্ত আগ্রহে, তিন মাস পর পর প্রতিবন্ধী ভাতা বাবদ ২২৫০ টাকা আর পানছড়ি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা কলেজ অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা কলেজের ফি-সহ  সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন বলে লেখাপড়া চালিয়ে নিতে পারতেছি।
তিনি সেলাই মেশিন দেওয়া মানবতাবাদী দুই মহিলাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আরো বলেন- এর ফলে লেখা-পড়ার পাশাপাশি সেলাই মেশিন কাজ করে আয় করতে পারবো আর স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
শতরুপা চাকমা ও শিক্ষিকা প্রতিভা ত্রিপুরা বলেন- শৈশব থেকেই শারীরিক অসঙ্গতি নিয়ে বেড়ে উঠা পিতা-মাতাহীন, দরিদ্র পরিবারের এই মেয়েটি সব বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তাঁর চাওয়া সামান্য একটি সেলাই মেশিন। তাঁকে সেলাই মেশিনটি দিতে পেরে আমরাও খুশি।  প্রত্যন্ত অঞ্চলের এ ধরনের দরিদ্র ও অসহায় মানুষদেরকে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর জন্য সকলে সহযোগিতার আহবান জানান।

তাং-০৬.০৩.২০২০ইং